জয় গোস্বামী
মুকুল যখন ভাসে তখন
হাতের পাতায়
দু একটি জলবিন্দু এসে
মার্জনা চায়
দু একটি জলবিন্দু তখন
চোখের আলোয়
দুর্বল সেই দীপকে বলে!
“আমায় জ্বালো!”
জ্বালতে গিয়ে দীপ নিজেকেই
জ্বালায় পোড়ায়
পুড়তে পুড়তে আকাশতীরের
বন্ধুকে পায়
বন্ধু তাকে ঝড়বাদলে
আগলে রাখে
কাছে পেয়েও বন্ধুকে সে
স্বপ্নে ডাকে
স্বপ্নটিকে সত্যি করে --
মুকুল ভাসায়
বন্ধুটি তার চোখের পাতায়
হাতের পাতায় ...
যখন সময় থমকে দাঁড়ায়

ওরা কাজ করে
Wednesday, February 27, 2008
ও আকাশপার
জয় গোস্বামী
যা কিছু মৃত্যুর নিচে যা কিছু অগ্নির
নিচে ডুবে যায় তারা ফিরে ফিরে আসে
জলভাবে , বায়ুভাবে , ঘাস থেকে ঘাসে
ফেলে দেয় লঘু পাখা -- ভারী পাখাটির
বড় কষ্ট , বলে ওরা , ছোট কষ্ট বলে
লেখায় রেখায় আঁকা ও আকাশপার
তুমি জানো অস্তসূর্য যে ফেলুক জলে
আমি তা ভাসিয়ে নিই এপার ওপার ...
যা কিছু মৃত্যুর নিচে যা কিছু অগ্নির
নিচে ডুবে যায় তারা ফিরে ফিরে আসে
জলভাবে , বায়ুভাবে , ঘাস থেকে ঘাসে
ফেলে দেয় লঘু পাখা -- ভারী পাখাটির
বড় কষ্ট , বলে ওরা , ছোট কষ্ট বলে
লেখায় রেখায় আঁকা ও আকাশপার
তুমি জানো অস্তসূর্য যে ফেলুক জলে
আমি তা ভাসিয়ে নিই এপার ওপার ...
Monday, February 25, 2008
কবিতা - “বাংলা ভাষা উচ্চারিত হলে”
কবি - শামসুর রহমান
বাংলা ভাষা উচ্চারিত হলে নিকানো উঠোনে ঝরে
রোদ , বারান্দায় লাগে জ্যোৎস্নর চন্দন । বাংলা ভাষা
উচ্চারিত হলে অন্ধ বাউলের একতারা বাজে
উদার গৈরিক মাঠে , খোলা পথে , উত্তাল নদীর
বাঁকে বাঁকে , নদীও নর্তকী হয় ।যখন সকালে
নতুন শিক্ষার্থী লেখে তার বাল্যশিক্ষার অক্ষর ,
কাননে কুসুম কলি ফোটে , গো রাখালের বাঁশি
হাওয়াকে বানায় মেঠো সুর , পুকুরে কলস ভাসে ।
বাংলা ভাষা উচ্চারিত হলে চোখে ভেসে ওঠে কত
চেনা ছবি ; মা আমার দোলনা দুলিয়ে কাটছেন
ঘুম পাড়ানিয়া ছড়া কোন সে সুদূরে ; সত্তা তার
আশাবরী , নানী বিষাদ সিন্ধুর স্পন্দে দুলে
দুলে রমজানী সাঁঝে ভাজেন ডালের বড়া , আর
একুশের প্রথম প্রভাত ফেরী-অলৌকিক ভোর ।
বাংলা ভাষা উচ্চারিত হলে নিকানো উঠোনে ঝরে
রোদ , বারান্দায় লাগে জ্যোৎস্নর চন্দন । বাংলা ভাষা
উচ্চারিত হলে অন্ধ বাউলের একতারা বাজে
উদার গৈরিক মাঠে , খোলা পথে , উত্তাল নদীর
বাঁকে বাঁকে , নদীও নর্তকী হয় ।যখন সকালে
নতুন শিক্ষার্থী লেখে তার বাল্যশিক্ষার অক্ষর ,
কাননে কুসুম কলি ফোটে , গো রাখালের বাঁশি
হাওয়াকে বানায় মেঠো সুর , পুকুরে কলস ভাসে ।
বাংলা ভাষা উচ্চারিত হলে চোখে ভেসে ওঠে কত
চেনা ছবি ; মা আমার দোলনা দুলিয়ে কাটছেন
ঘুম পাড়ানিয়া ছড়া কোন সে সুদূরে ; সত্তা তার
আশাবরী , নানী বিষাদ সিন্ধুর স্পন্দে দুলে
দুলে রমজানী সাঁঝে ভাজেন ডালের বড়া , আর
একুশের প্রথম প্রভাত ফেরী-অলৌকিক ভোর ।
দর্শনচর্চা ও বাঙালি (১৪৯৩-১৬০৫)
*** বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত (দ্বিতীয় খন্ড) থেকে কিছু আগ্রহপূর্ণ তথ্য তুলে দিলাম ।
আমরা জানি যে শুধুমাত্র বিশুদ্ধ দর্শনচর্চায় বাঙালি আগ্রহ দেখায়নি । প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালির মধ্যে দুটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য দেখা গেছে -- তীক্ষ্ণবুদ্ধি ও আবেগ । ষোড়শ শতাব্দীতে বাঙালি মেধার শ্রেষ্ঠ দান হল নব্যন্যায় ও চৈতন্য রেনেশাঁস । এই দুটি ক্ষেত্রেও দেখা যায় যে একদিকে নব্যন্যায় বুদ্ধির রন্ধ্রে রন্ধ্রে অনুপ্রবেশ করেছে ; আবার অন্যদিকে চৈতন্য প্রবর্তিত বৈষ্ণব মতাদর্শ আবেগ নির্ভর ।
ষোড়শ শতাব্দীর আগে বঙ্গদেশে কী রকমের দর্শনচর্চা হত ? তার প্রত্যক্ষ পরিচয় পাওয়া কঠিন । কিন্তু কিছু উপাদান থেকে জানা যায় যে চৈতন্যযুগের আগে এখানে স্মৃতি-মীমাংসার চর্চা ছিল এবং ষড়দর্শনও অনুশীলিত হত । কারণ বঙ্গাক্ষরে লেখা ষড়দর্শনের পুঁথি ও টীকা এখানে অনেক পাওয়া গেছে । মুসলমান আকরমণের পর হিন্দু সমাজের পুনর্গঠনের জন্য চৈতন্যযুগের আগে স্মৃতির চর্চা খুব বেশি হত । স্মৃতির চর্চা করার করার জন্য কিছুটা মীমাংসা জানা দরকার ছিল , তাই বিদ্যার্থীরা সেইটুকুই মীমাংসা চর্চা করতেন । কিন্তু একসময় বঙ্গের বাইরেও গৌড়-মীমাংসকদের খ্যাতি ছিল ।
বেদান্তচর্চা ১৫-১৬ বছর পরেও চলেছে । এরপর বঙ্গদেশে অদ্বৈতবাদের ভক্তিবাদী ব্যাখ্যাই বেশি জনপ্রিয় হতে শুরু করে ।
মধ্যযুগে নব্যন্যায় ছাড়া অন্যকিছু যেমন সাংখ্য বা বৈশেষিক দর্শন খুব বেশি অনুশীলিত হয়েছিল বলে মনে হয় না ।
সবশেষে বঙ্গদেশে ন্যায়চর্চার কথা বলতেই হবে । গৌড়িয় নৈয়ায়িকদের সূক্ষ্ম বিচারবুদ্ধি , তার্কিকতা ও বিচক্ষণতা সারা ভারতবর্ষেই শ্রদ্ধা লাভ করেছিল । খ্রীঃ ষোড়শ শতকে নবদ্বীপ নব্যন্যায়ের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল ।
এর সঙ্গে এই কথা কিন্তু মনে রাখতেই হবে যে বাঙালিরা কিন্তু নব্যন্যায় সৃষ্টি করেননি । বাঙালি পন্ডিতরা এই গ্রন্থের অসংখ্য টীকা রচনা করেন । আসলে এই টীকাগুলিই বেশি প্রচার লাভ করেছিল ।
অনেকে বলেন এটাই বাঙালির স্বভাব । নিজেদের মৌলিক চিন্তা প্রকাশ করতে না চেয়ে তাঁরা পুরোনো গ্রন্থগুলিকেই আবার বিচার করতেন । পূর্বপক্ষের মত খন্ডন করে তাঁরা নিজেদের বুদ্ধি ও পান্ডিত্যের প্রকাশ করতেন ।
স্বর্গীয় মনোমোহন চক্রবর্তী বলেছিলেন -- রঘুনাথ চক্রবর্তী থেকে শুরু করে গদাধর ভট্টাচার্য পর্যন্ত নবদ্বীপে এমন অনেক পন্ডিতের আবির্ভাব হয়েছিল যাঁরা মধ্যযুগের ইয়োরোপিয় দার্শনিকদের পরাজিত করতে পারতেন তাঁদের বিচার-বুদ্ধি ও চিন্তাধারার মাধ্যমে ।
যাইহোক , বলা যায় বাঙালি মণীষার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন সেই সময়েই দেখা গিয়েছিল । সবকিছুর মধ্যে নব্যন্যায় ও চৈতন্যদেবের ভক্তিবাদ বঙ্গের বাইরেও সবকিছুর মধ্যে নব্যন্যায় ও চৈতন্যদেবের ভক্তিবাদ বঙ্গের বাইরেও শ্রদ্ধা অর্জন করতে পেরেছিল । যদিও নব্যন্যায় বাঙালির বিচার-বুদ্ধিকে আরও তীক্ষ্ণ করেছিল কিন্তু অনেকে প্রশ্ন করেন যে এর উপযোগিতা কী ? ১৭৪০ সালে ফাদার পন্স নামে এক জেসুইট বঙ্গদেশে এসে নব্যন্যায় পড়েছিলাম । কিন্তু তিনি লিখেছিলেন --“it stuffed with an endless number of questions, great deal more subtle than useful”. ছাত্রদের সম্পর্কে তিনি বলেন--“the students spend several years in studying a thousand varieties of subtleties on the members of the syllogism, the causes, the negations, the genera, the species etc. They dispute stubbornly on such like trifles and go away without having required any other knowledge”. যাইহোক , দর্শনটির উপযোগিতা নিয়ে আমরা এখানে আলোচনা না করে বলতে পারি যে বাঙালির মেধা , ধী-শক্তির প্রকাশ এই দর্শনালোচনার মাধ্যমে হয়েছিল ।
***বই -- “বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত” (দ্বিতীয় খন্ড:-- চৈতন্যযুগ)
আমরা জানি যে শুধুমাত্র বিশুদ্ধ দর্শনচর্চায় বাঙালি আগ্রহ দেখায়নি । প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালির মধ্যে দুটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য দেখা গেছে -- তীক্ষ্ণবুদ্ধি ও আবেগ । ষোড়শ শতাব্দীতে বাঙালি মেধার শ্রেষ্ঠ দান হল নব্যন্যায় ও চৈতন্য রেনেশাঁস । এই দুটি ক্ষেত্রেও দেখা যায় যে একদিকে নব্যন্যায় বুদ্ধির রন্ধ্রে রন্ধ্রে অনুপ্রবেশ করেছে ; আবার অন্যদিকে চৈতন্য প্রবর্তিত বৈষ্ণব মতাদর্শ আবেগ নির্ভর ।
ষোড়শ শতাব্দীর আগে বঙ্গদেশে কী রকমের দর্শনচর্চা হত ? তার প্রত্যক্ষ পরিচয় পাওয়া কঠিন । কিন্তু কিছু উপাদান থেকে জানা যায় যে চৈতন্যযুগের আগে এখানে স্মৃতি-মীমাংসার চর্চা ছিল এবং ষড়দর্শনও অনুশীলিত হত । কারণ বঙ্গাক্ষরে লেখা ষড়দর্শনের পুঁথি ও টীকা এখানে অনেক পাওয়া গেছে । মুসলমান আকরমণের পর হিন্দু সমাজের পুনর্গঠনের জন্য চৈতন্যযুগের আগে স্মৃতির চর্চা খুব বেশি হত । স্মৃতির চর্চা করার করার জন্য কিছুটা মীমাংসা জানা দরকার ছিল , তাই বিদ্যার্থীরা সেইটুকুই মীমাংসা চর্চা করতেন । কিন্তু একসময় বঙ্গের বাইরেও গৌড়-মীমাংসকদের খ্যাতি ছিল ।
বেদান্তচর্চা ১৫-১৬ বছর পরেও চলেছে । এরপর বঙ্গদেশে অদ্বৈতবাদের ভক্তিবাদী ব্যাখ্যাই বেশি জনপ্রিয় হতে শুরু করে ।
মধ্যযুগে নব্যন্যায় ছাড়া অন্যকিছু যেমন সাংখ্য বা বৈশেষিক দর্শন খুব বেশি অনুশীলিত হয়েছিল বলে মনে হয় না ।
সবশেষে বঙ্গদেশে ন্যায়চর্চার কথা বলতেই হবে । গৌড়িয় নৈয়ায়িকদের সূক্ষ্ম বিচারবুদ্ধি , তার্কিকতা ও বিচক্ষণতা সারা ভারতবর্ষেই শ্রদ্ধা লাভ করেছিল । খ্রীঃ ষোড়শ শতকে নবদ্বীপ নব্যন্যায়ের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল ।
এর সঙ্গে এই কথা কিন্তু মনে রাখতেই হবে যে বাঙালিরা কিন্তু নব্যন্যায় সৃষ্টি করেননি । বাঙালি পন্ডিতরা এই গ্রন্থের অসংখ্য টীকা রচনা করেন । আসলে এই টীকাগুলিই বেশি প্রচার লাভ করেছিল ।
অনেকে বলেন এটাই বাঙালির স্বভাব । নিজেদের মৌলিক চিন্তা প্রকাশ করতে না চেয়ে তাঁরা পুরোনো গ্রন্থগুলিকেই আবার বিচার করতেন । পূর্বপক্ষের মত খন্ডন করে তাঁরা নিজেদের বুদ্ধি ও পান্ডিত্যের প্রকাশ করতেন ।
স্বর্গীয় মনোমোহন চক্রবর্তী বলেছিলেন -- রঘুনাথ চক্রবর্তী থেকে শুরু করে গদাধর ভট্টাচার্য পর্যন্ত নবদ্বীপে এমন অনেক পন্ডিতের আবির্ভাব হয়েছিল যাঁরা মধ্যযুগের ইয়োরোপিয় দার্শনিকদের পরাজিত করতে পারতেন তাঁদের বিচার-বুদ্ধি ও চিন্তাধারার মাধ্যমে ।
যাইহোক , বলা যায় বাঙালি মণীষার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন সেই সময়েই দেখা গিয়েছিল । সবকিছুর মধ্যে নব্যন্যায় ও চৈতন্যদেবের ভক্তিবাদ বঙ্গের বাইরেও সবকিছুর মধ্যে নব্যন্যায় ও চৈতন্যদেবের ভক্তিবাদ বঙ্গের বাইরেও শ্রদ্ধা অর্জন করতে পেরেছিল । যদিও নব্যন্যায় বাঙালির বিচার-বুদ্ধিকে আরও তীক্ষ্ণ করেছিল কিন্তু অনেকে প্রশ্ন করেন যে এর উপযোগিতা কী ? ১৭৪০ সালে ফাদার পন্স নামে এক জেসুইট বঙ্গদেশে এসে নব্যন্যায় পড়েছিলাম । কিন্তু তিনি লিখেছিলেন --“it stuffed with an endless number of questions, great deal more subtle than useful”. ছাত্রদের সম্পর্কে তিনি বলেন--“the students spend several years in studying a thousand varieties of subtleties on the members of the syllogism, the causes, the negations, the genera, the species etc. They dispute stubbornly on such like trifles and go away without having required any other knowledge”. যাইহোক , দর্শনটির উপযোগিতা নিয়ে আমরা এখানে আলোচনা না করে বলতে পারি যে বাঙালির মেধা , ধী-শক্তির প্রকাশ এই দর্শনালোচনার মাধ্যমে হয়েছিল ।
***বই -- “বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত” (দ্বিতীয় খন্ড:-- চৈতন্যযুগ)
Sunday, February 24, 2008
“মনুসংহিতা” (বা বলা যায় ব্রাহ্মণ্য ধর্মে ?) তে নারীর স্থান
আমি “মনুসংহিতা” এখন পড়ছি । পড়া শেষ হয়নি , তাই এই লেখা পরে আরও বড়ো হতে থাকবে । আমার নিজের মত দিচ্ছি না , শুধু শ্লোকগুলির বাংলা অর্থ হুবহু তুলে দিচ্ছি । বিচার নিজেরাই করুন । অনেক পরস্পরবিরোধী মত দেখতে পাচ্ছি কিন্তু সম্পূর্ণ পড়া শেষ হলে আমার নিজের মত লিখব , তার আগে নয় ।
* নারীদের স্বভাবই হল পুরুষদের দুষিত করা । অতএব পন্ডিতগণ স্ত্রীলোক সম্বন্ধে অনবহিত হন না । (দ্বিতীয় অধ্যায়, ২১৩)
* সংসারে কাম ও ক্রোধের বশবর্তী বিদ্বান বা অবিদ্বান ব্যক্তিকে স্ত্রীলোক বিপথে নিতে পারে । (দ্বিতীয় অধ্যায়, ২১৪)
* মা , বোন বা মেয়ের সঙ্গে শূন্যগৃহাদিতে পুরুষ থাকবে না । শক্তিশালী ইন্দ্রিয়সমূহ বিদ্বান ব্যক্তিকেও বশীভূত করে । (দ্বিতীয় অধ্যায়, ২১৫)
* বহু কল্যাণকামী পিতা , ভ্রাতা , পতি , দেবর কর্তৃক কন্যা সম্মানীয়া ও ভূষণীয়া । (তৃতীয় অধ্যায়, ৫৫)
* যেখানে নারীগণ সম্মানিত হন , সেখানে দেবগণ প্রীত হন । যেখানে এঁরা সম্মানিত হন না , সেখানে সকল কর্ম নিষ্ফল হয় । (তৃতীয় অধ্যায়, ৫৬)
* জামিগণ (ভগিনী , পত্নী , কন্যা , ভ্রাতৃবধূ প্রভৃতি) যেখানে দুঃখ করেন , সেই বংশ শীঘ্র বিনষ্ট হয় । যেখানে এঁরা দুঃখ করেন না , সেই বংশ সর্বদা উন্নতিলাভ করে । (তৃতীয় অধ্যায়, ৫৭)
* জামিগণ অসম্মানিত হয়ে যে গৃহসমূহকে শাপ দেন , সেই গৃহসকল অভিচারহতের ন্যায় সব দিকে বিনষ্ট হয় । (তৃতীয় অধ্যায়, ৫৮)
* অতএব উন্নতিকামী ব্যক্তিগণ কর্তৃক এঁরা অলংকার , বস্ত্র ও ভোজ্য দ্বারা সর্বদা উৎসবাদিতে পূজনীয়া । (তৃতীয় অধ্যায়, ৫৯)
* যে কুলে স্বামী স্ত্রীকে নিয়ে , স্ত্রী স্বামীকে নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে , সেই কুলে সর্বদা নিশ্চয়ই কল্যাণ হয় । (তৃতীয় অধ্যায়, ৬০)
* স্ত্রীলোক দীপ্তিমতী হলে সেই সমগ্র কুল কান্তিমান হয় । তিনি দীপ্তিমতী না হলে সবই দীপ্তিহীন হয় । (তৃতীয় অধ্যায়, ৬২)
* নিজের ভৃত্যবর্গ (নিজের) ছায়া , কন্যা পরম কৃপাপাত্র । সুতরাং , এদের দ্বারা তিরস্কৃত হয়েও অসন্তপ্তচিত্তে সর্বদা সহ্য করবে । (চতুর্থ অধ্যায়, ১৮৫)
চলবে .......
* নারীদের স্বভাবই হল পুরুষদের দুষিত করা । অতএব পন্ডিতগণ স্ত্রীলোক সম্বন্ধে অনবহিত হন না । (দ্বিতীয় অধ্যায়, ২১৩)
* সংসারে কাম ও ক্রোধের বশবর্তী বিদ্বান বা অবিদ্বান ব্যক্তিকে স্ত্রীলোক বিপথে নিতে পারে । (দ্বিতীয় অধ্যায়, ২১৪)
* মা , বোন বা মেয়ের সঙ্গে শূন্যগৃহাদিতে পুরুষ থাকবে না । শক্তিশালী ইন্দ্রিয়সমূহ বিদ্বান ব্যক্তিকেও বশীভূত করে । (দ্বিতীয় অধ্যায়, ২১৫)
* বহু কল্যাণকামী পিতা , ভ্রাতা , পতি , দেবর কর্তৃক কন্যা সম্মানীয়া ও ভূষণীয়া । (তৃতীয় অধ্যায়, ৫৫)
* যেখানে নারীগণ সম্মানিত হন , সেখানে দেবগণ প্রীত হন । যেখানে এঁরা সম্মানিত হন না , সেখানে সকল কর্ম নিষ্ফল হয় । (তৃতীয় অধ্যায়, ৫৬)
* জামিগণ (ভগিনী , পত্নী , কন্যা , ভ্রাতৃবধূ প্রভৃতি) যেখানে দুঃখ করেন , সেই বংশ শীঘ্র বিনষ্ট হয় । যেখানে এঁরা দুঃখ করেন না , সেই বংশ সর্বদা উন্নতিলাভ করে । (তৃতীয় অধ্যায়, ৫৭)
* জামিগণ অসম্মানিত হয়ে যে গৃহসমূহকে শাপ দেন , সেই গৃহসকল অভিচারহতের ন্যায় সব দিকে বিনষ্ট হয় । (তৃতীয় অধ্যায়, ৫৮)
* অতএব উন্নতিকামী ব্যক্তিগণ কর্তৃক এঁরা অলংকার , বস্ত্র ও ভোজ্য দ্বারা সর্বদা উৎসবাদিতে পূজনীয়া । (তৃতীয় অধ্যায়, ৫৯)
* যে কুলে স্বামী স্ত্রীকে নিয়ে , স্ত্রী স্বামীকে নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে , সেই কুলে সর্বদা নিশ্চয়ই কল্যাণ হয় । (তৃতীয় অধ্যায়, ৬০)
* স্ত্রীলোক দীপ্তিমতী হলে সেই সমগ্র কুল কান্তিমান হয় । তিনি দীপ্তিমতী না হলে সবই দীপ্তিহীন হয় । (তৃতীয় অধ্যায়, ৬২)
* নিজের ভৃত্যবর্গ (নিজের) ছায়া , কন্যা পরম কৃপাপাত্র । সুতরাং , এদের দ্বারা তিরস্কৃত হয়েও অসন্তপ্তচিত্তে সর্বদা সহ্য করবে । (চতুর্থ অধ্যায়, ১৮৫)
চলবে .......
Wednesday, February 20, 2008
আমি চাই
সুমনের গান
আমি চাই সাঁওতাল তার ভাষায় বলবে রাষ্ট্রপুঞ্জে
আমি চাই মহুল ফুটবে শৌখিনতার গোলাপকুঞ্জে
আমি চাই নেপালি ছেলেটা গিটার হাতে
আমি চাই তার ভাষাতেই গাইতে আসবে কলকাতাতে
আমি চাই ঝাড়খন্ডির তীর-ধনুকে --
আমি চাই ঝুমুর বাজবে ঝুমুর বাজবে তোমার বুকে
আমি চাই গাছ কাটা হলে শোকসভা হবে বিধানসভায়
আমি চাই প্রতিবাদ হবে রক্তপলাশে রক্তজবায়
আমি চাই পুকুর বোজালে আকাশ ভাসবে চোখের জলে
আমি চাই সব্বাই যেন দিন বদলের গল্প বলে
আমি চাই মন্ত্রীরা প্রেম করুন সকলে নিয়ম কর
আমি চাই বক্তৃতা নয় কবিতা পড়ুন কন্ঠ ভরে
আমি চাই কাশ্মীরে আর শুনবে না কেউ গুলির শব্দ
আমি চাই মানুষের হাতে রাজনীতি হবে ভীষণ জব্দ
আমি চাই হিন্দু নেতার সালমা খাতুন পুত্রবধূ
আমি চাই ধর্ম বলতে মানুষ বুঝবে মানুষ শুধু
যদি বল চাইছি নেহাত , চাইছি নে হাত স্বর্গরাজ্য
আমি চাই একদিন হবে , একদিন হবে এটাই গ্রাহ্য ।।
আমি চাই সাঁওতাল তার ভাষায় বলবে রাষ্ট্রপুঞ্জে
আমি চাই মহুল ফুটবে শৌখিনতার গোলাপকুঞ্জে
আমি চাই নেপালি ছেলেটা গিটার হাতে
আমি চাই তার ভাষাতেই গাইতে আসবে কলকাতাতে
আমি চাই ঝাড়খন্ডির তীর-ধনুকে --
আমি চাই ঝুমুর বাজবে ঝুমুর বাজবে তোমার বুকে
আমি চাই গাছ কাটা হলে শোকসভা হবে বিধানসভায়
আমি চাই প্রতিবাদ হবে রক্তপলাশে রক্তজবায়
আমি চাই পুকুর বোজালে আকাশ ভাসবে চোখের জলে
আমি চাই সব্বাই যেন দিন বদলের গল্প বলে
আমি চাই মন্ত্রীরা প্রেম করুন সকলে নিয়ম কর
আমি চাই বক্তৃতা নয় কবিতা পড়ুন কন্ঠ ভরে
আমি চাই কাশ্মীরে আর শুনবে না কেউ গুলির শব্দ
আমি চাই মানুষের হাতে রাজনীতি হবে ভীষণ জব্দ
আমি চাই হিন্দু নেতার সালমা খাতুন পুত্রবধূ
আমি চাই ধর্ম বলতে মানুষ বুঝবে মানুষ শুধু
যদি বল চাইছি নেহাত , চাইছি নে হাত স্বর্গরাজ্য
আমি চাই একদিন হবে , একদিন হবে এটাই গ্রাহ্য ।।
ধর্ম ও সমাজ
অনেক দিন আগে একটা লেখা পড়েছিলাম । মূল বিষয়টা এখানে তুলে দিলাম । ধর্মের উৎপত্তি যে ভাবেই হোক না কেন , পৃথিবীর সমস্ত সমাজেই এর বিকাশ হয়েছে একই ভাবে -- মূলত সামাজিক কাঠামোকে ভিত্তি করেই । পরবর্তীকালে যখন শ্রেণী বিভক্ত সমাজ তৈরি হয়েছে , তখন সমাজের ভাগ্য নিয়ন্ত্রক গোষ্ঠী অবশ্য নিজেদের স্বার্থেই ধর্মকে সমাজের প্রকৃত রূপ বলে প্রচার করে এসেছেন শতাব্দীর পর শতাব্দী । বলা হয়েছে ধর্ম হচ্ছে এমন একটি প্রথা , যা সমাজকে “ধরে থাকে” । আর সেই জন্যই নাকি সংস্কৃত ভাষায় তার নাম “ধর্ম” !
অথচ সভ্যতার ইতিহাস কিন্তু ঠিক এর বিপরীত সাক্ষ্যই দেবে । যখন যেখানে যে ভাবে সমাজের কাঠামো গড়ে উঠেছে , তখন সেখানে ধর্মের ভেতরের ও বাইরের ধারণাগুলিও বদলানো হয়েছে । ধর্ম প্রথমে ছিল অলৌকিকের প্রতি অন্ধ বিশ্বাস , পরে সমাজপতিদের শ্রেণী স্বার্থ রক্ষা করার অস্ত্র
এই যুক্তিটি এবার বিচার করে দেখা যাক । প্রাচীনতম সমাজ ছিল মূলত মাতৃকেন্দ্রিক । মানুষ তখনও নিয়ম অনুযায়ী সামাজিক ও ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি করতে শেখেনি বলে একমাত্র মাতৃ-পরিচয়ই ছিল তখন নির্দিষ্ট এবং পিতৃ-পরিচয় যেহেতু বোঝা যেত না , ফলে আদিমতম যে সামাজিক ধর্ম বিশ্বাস তৈরি হয়েছিল , তার মূল রূপ ছিল মাতৃমূর্তি উপাসনা ।
দক্ষিণ ইউরোপ , উত্তর আফ্রিকা , পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন স্থানে অনেক নারীমূর্তি পাওয়া গেছে । অনেকগুলি ২০,০০০ বছর বা আরও বেশি পুরোনো । অথচ সেই সময়কার কোনো পুরুষ দেবমূর্তির উপস্থিতি দেখা যায় না । সুতরাং সমাজ জীবনে মায়ের গুরুত্ব ছিল খুবই বেশি এবং “ভেনাস” মূর্তিগুলি আসলে তার প্রতীক ছাড়া আর কিছুই নয় ।
এখানে প্রশ্ন ওঠে যে পিতৃ-প্রধান সমাজব্যবস্থা কী ভাবে এবং কখন থেকে শুরু হয়েছে ? আসলে খুব সহজভাবে বলা যায় যে , সমস্ত সমাজব্যবস্থা তৈরি হয় খাদ্য সংগ্রহের ফলাফলের উপর নির্ভর করে । আদিম সমাজে ফলমূল সংগ্রহ করা ছিল মূলত মেয়েদের কাজ ও পশু শিকার ছিল পুরুষদের কাজ । যেহেতু খাবারের বেশিরভাগ অংশই আসত শিকারের মাংস থেকে তাই ধীরে ধীরে পুরুষদের গুরুত্ব বাড়ার এটার একটা প্রধান কারণ ।
অথচ সভ্যতার ইতিহাস কিন্তু ঠিক এর বিপরীত সাক্ষ্যই দেবে । যখন যেখানে যে ভাবে সমাজের কাঠামো গড়ে উঠেছে , তখন সেখানে ধর্মের ভেতরের ও বাইরের ধারণাগুলিও বদলানো হয়েছে । ধর্ম প্রথমে ছিল অলৌকিকের প্রতি অন্ধ বিশ্বাস , পরে সমাজপতিদের শ্রেণী স্বার্থ রক্ষা করার অস্ত্র
এই যুক্তিটি এবার বিচার করে দেখা যাক । প্রাচীনতম সমাজ ছিল মূলত মাতৃকেন্দ্রিক । মানুষ তখনও নিয়ম অনুযায়ী সামাজিক ও ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি করতে শেখেনি বলে একমাত্র মাতৃ-পরিচয়ই ছিল তখন নির্দিষ্ট এবং পিতৃ-পরিচয় যেহেতু বোঝা যেত না , ফলে আদিমতম যে সামাজিক ধর্ম বিশ্বাস তৈরি হয়েছিল , তার মূল রূপ ছিল মাতৃমূর্তি উপাসনা ।
দক্ষিণ ইউরোপ , উত্তর আফ্রিকা , পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন স্থানে অনেক নারীমূর্তি পাওয়া গেছে । অনেকগুলি ২০,০০০ বছর বা আরও বেশি পুরোনো । অথচ সেই সময়কার কোনো পুরুষ দেবমূর্তির উপস্থিতি দেখা যায় না । সুতরাং সমাজ জীবনে মায়ের গুরুত্ব ছিল খুবই বেশি এবং “ভেনাস” মূর্তিগুলি আসলে তার প্রতীক ছাড়া আর কিছুই নয় ।
এখানে প্রশ্ন ওঠে যে পিতৃ-প্রধান সমাজব্যবস্থা কী ভাবে এবং কখন থেকে শুরু হয়েছে ? আসলে খুব সহজভাবে বলা যায় যে , সমস্ত সমাজব্যবস্থা তৈরি হয় খাদ্য সংগ্রহের ফলাফলের উপর নির্ভর করে । আদিম সমাজে ফলমূল সংগ্রহ করা ছিল মূলত মেয়েদের কাজ ও পশু শিকার ছিল পুরুষদের কাজ । যেহেতু খাবারের বেশিরভাগ অংশই আসত শিকারের মাংস থেকে তাই ধীরে ধীরে পুরুষদের গুরুত্ব বাড়ার এটার একটা প্রধান কারণ ।
Monday, February 18, 2008
চমকে দিল বি. জে. পি.
নরেন্দ্র মোদী, বজরং দল ইত্যাদির সুবাদে দাঙ্গাবাজ যে ছাপ ভারতের প্রধান বিরোধী দলের গায়ে লেগেছে, তা নিয়ে পার্টির বিভিন্ন মহলেও অস্বস্তির ভাব চোখ এড়ায়নি । কিন্তু জো জিতা শেষ অবধি সেই সিকন্দর । গত লোকসভা নির্বাচনের ফল তাদের সুখনিদ্রায় ব্যাঘাত ঘটানোয় এবার কিন্তু তারা নিজেদেরকে প্রগতিবাদী প্রমাণ করতে তৎপর । ভারতের গত লোকসভা নির্বাচনে (২০০৪) ৫৪৩ টি আসনের মধ্যে মহিলা সদস্য ছিলেন মাত্র ৪৫ জন । সংসদে মহিলাদের জন্য ৩৩% আসন সংরক্ষণের কথা নিয়ে জলঘোলা হচ্ছে বেশ কিছু বছর ধরে । ভারতীয় জনতা পার্টি কিন্তু এবার তাদের মোক্ষম চালটি দিয়েছে । নিজেরাই দলের সব স্তরে মহিলাদের জন্য ৩৩% আসন সংরক্ষণ শুরু করে দিল তারা । কংগ্রেস ও অন্যান্য দলগুলি একটু চমকেছে এতে । ভোটের আগে এমন একটা ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত ভোটের চরিত্রে ও সমীকরণে একটু প্রভাব ফেলবে বৈ কি !
আমার রোজকার কাজ
আমি পেশায় একজন শিক্ষিকা, কিন্তু ঠিক প্রথাগত রোজকার কচকচানি নয় । আমি বিদেশিদের বাংলা শেখাচ্ছি বছর চারেক হল । যত না শেখাচ্ছি, শিখছি বোধ হয় আরও অনেক বেশি । রাজনীতি, ধর্ম, সমাজ, শিল্প, সাহিত্য সব বিষয়ে আর আমাদের চার পাশের বদলাতে থাকা দুনিয়া নিয়ে বিভিন্ন লেখা এখানে পোস্ট করতে এবং আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারব আশা করছি । বাংলা, ইংরেজি দুটি ভাষার পথই খোলা রাখলাম .. ভালো দিন কাটাবেন ।
Subscribe to:
Posts (Atom)