যখন সময় থমকে দাঁড়ায়

যখন সময় থমকে দাঁড়ায়
ওরা কাজ করে

Wednesday, February 20, 2008

ধর্ম ও সমাজ

অনেক দিন আগে একটা লেখা পড়েছিলাম । মূল বিষয়টা এখানে তুলে দিলাম । ধর্মের উৎপত্তি যে ভাবেই হোক না কেন , পৃথিবীর সমস্ত সমাজেই এর বিকাশ হয়েছে একই ভাবে -- মূলত সামাজিক কাঠামোকে ভিত্তি করেই । পরবর্তীকালে যখন শ্রেণী বিভক্ত সমাজ তৈরি হয়েছে , তখন সমাজের ভাগ্য নিয়ন্ত্রক গোষ্ঠী অবশ্য নিজেদের স্বার্থেই ধর্মকে সমাজের প্রকৃত রূপ বলে প্রচার করে এসেছেন শতাব্দীর পর শতাব্দী । বলা হয়েছে ধর্ম হচ্ছে এমন একটি প্রথা , যা সমাজকে “ধরে থাকে” । আর সেই জন্যই নাকি সংস্কৃত ভাষায় তার নাম “ধর্ম” !

অথচ সভ্যতার ইতিহাস কিন্তু ঠিক এর বিপরীত সাক্ষ্যই দেবে । যখন যেখানে যে ভাবে সমাজের কাঠামো গড়ে উঠেছে , তখন সেখানে ধর্মের ভেতরের ও বাইরের ধারণাগুলিও বদলানো হয়েছে । ধর্ম প্রথমে ছিল অলৌকিকের প্রতি অন্ধ বিশ্বাস , পরে সমাজপতিদের শ্রেণী স্বার্থ রক্ষা করার অস্ত্র

এই যুক্তিটি এবার বিচার করে দেখা যাক । প্রাচীনতম সমাজ ছিল মূলত মাতৃকেন্দ্রিক । মানুষ তখনও নিয়ম অনুযায়ী সামাজিক ও ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি করতে শেখেনি বলে একমাত্র মাতৃ-পরিচয়ই ছিল তখন নির্দিষ্ট এবং পিতৃ-পরিচয় যেহেতু বোঝা যেত না , ফলে আদিমতম যে সামাজিক ধর্ম বিশ্বাস তৈরি হয়েছিল , তার মূল রূপ ছিল মাতৃমূর্তি উপাসনা ।

দক্ষিণ ইউরোপ , উত্তর আফ্রিকা , পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন স্থানে অনেক নারীমূর্তি পাওয়া গেছে । অনেকগুলি ২০,০০০ বছর বা আরও বেশি পুরোনো । অথচ সেই সময়কার কোনো পুরুষ দেবমূর্তির উপস্থিতি দেখা যায় না । সুতরাং সমাজ জীবনে মায়ের গুরুত্ব ছিল খুবই বেশি এবং “ভেনাস” মূর্তিগুলি আসলে তার প্রতীক ছাড়া আর কিছুই নয় ।

এখানে প্রশ্ন ওঠে যে পিতৃ-প্রধান সমাজব্যবস্থা কী ভাবে এবং কখন থেকে শুরু হয়েছে ? আসলে খুব সহজভাবে বলা যায় যে , সমস্ত সমাজব্যবস্থা তৈরি হয় খাদ্য সংগ্রহের ফলাফলের উপর নির্ভর করে । আদিম সমাজে ফলমূল সংগ্রহ করা ছিল মূলত মেয়েদের কাজ ও পশু শিকার ছিল পুরুষদের কাজ । যেহেতু খাবারের বেশিরভাগ অংশই আসত শিকারের মাংস থেকে তাই ধীরে ধীরে পুরুষদের গুরুত্ব বাড়ার এটার একটা প্রধান কারণ ।

1 comment:

I said...

ভাল লাগলো আরো একজন ভারতীয়র বাংলা ব্লগ দেখে । লেখা চালিয়ে যান ।